ভিসার দাবিতে ‘বিক্ষোভ ও হুমকির’ জেরে ২০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিকের পাসপোর্ট ফেরত দিয়েছে ভারতীয় হাইকমিশন। গত আগস্টে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে ভারতীয় ভিসা পরিষেবা বন্ধ রয়েছে ।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আপৎকালীন এবং চিকিৎসার প্রয়োজন ছাড়া আপাতত বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সর্বশেষ খবর অনুযায়ী- ২০ হাজারের বেশি বাংলাদেশির পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হয়েছে। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের দিকে ব্যাপক বিক্ষোভ ও হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ভিসা পরিষেবাগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করার ফলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, বেশ কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, বর্তমানে শুধুমাত্র সীমিত সংখ্যক জরুরি ভিসার আবেদনগুলো বিবেচনা করা হচ্ছে। অবশ্য এর মধ্যে কিছু ব্যতিক্রম ভিসা আবেদনও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যেমন- মেডিকেল ইমার্জেন্সি, স্টুডেন্ট ভিসা এবং তৃতীয় দেশে ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় ডবল-এনট্রি ভিসা।
এর আগে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিক্ষোভের জেরে ভিসা পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছিল। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের এই ঘটনা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তোলে।
ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যম বলছে, বাংলাদেশে ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রগুলো অনেকাংশে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আর এর কারণে হতাশাগ্রস্ত আবেদনকারীদের অনেকেই ব্যাপকভাবে হাইকমিশনে ইমেইল করছেন, কিছু ইমেইলে ভাঙচুরের হুমকিও রয়েছে।
প্রতিবেদনে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, ভিসা আবেদন কেন্দ্রের সদস্যরা প্রশ্নবাণে জর্জরিত হচ্ছেন এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো জনগণের অসন্তোষ প্রকাশের স্থানে পরিণত হয়েছে। ক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের অভিযোগ জানানোর সময় প্রায়শই হাইকমিশনকে ট্যাগ করছে।
বাংলাদেশে ভারতের চারটি ভিসা সেন্টার রয়েছে। গত বছর এসব ভিসা সেন্টার থেকে ১৬ লাখ বাংলাদেশিকে ভ্রমণ ভিসা দেয়া হয়। যার মধ্যে ছিল সাড়ে চার লাখ চিকিৎসা ভিসা। এছাড়া এ বছরের আগস্ট পর্যন্ত ৮ লাখ ভিসা ইস্যু করে ভারত। যার মধ্যে দুই লাখ ছিল মেডিকেল ভিসা। ভারত বাংলাদেশি নাগরিকদের ক্ষেত্রে ১৫ ক্যাটাগিরতে ভিসা প্রদান করে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের মধ্যে চলমান অস্থিরতা এবং দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার কারণে ভারতীয় হাইকমিশন সতর্কতা অবলম্বন করছে। এছাড়া অস্থায়ী ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রেও অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করছে হাইকমিশন।
এদিকে উভয় দেশের সরকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে বলেও ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Matribhumir Khobor